বিশ্বনাথের ইতিহাসে মো.নাঈম আশফাক চৌধুরীই প্রথম ব্যক্তি যিনি জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় রৌপ্য পদক অর্জন, জাতীয় দলের কোচ হয়েছিলেন এবং বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন্।
বিশ্বনাথের মধ্যে মো.নাঈম আশফাক চৌধুরীই প্রথম ব্যক্তি যিনি জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় রৌপ্য পদক ও জাতীয় দলের কোচ হয়েছিলেন । শুধু তাই নয় বর্তমানে তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন্। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের দিঘলী গ্রামে ১৯৬৭ সালের ১লা অক্টোবর জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও মাতার নাম ডা: আক্তারুন্নেসা বেগম।
মো.নাঈম আশফাক চৌধুরী নিজ গ্রামের স্থানীয় দিঘলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা , সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে প্রথম বিভাগে এস.এস.সি ,একই কলেজ থেকে ১৯৮৫ সালে প্রথম বিভাগে এইচ.এস.সি. চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে মানবিক বিভাগে ২য় বিভাগে বি.এ পাশ করেন। ঐ বছরের ২৬ জুন সেনাবাহিনীর দুই লেফট্যানেন্ট পদে যোগ দেন। তিনি ক্যাডেট কলেজে ছাত্র থাকাকালীন অবস্থায় কলেজ গেমসের প্রিফেক্ট নির্বাচিত হন। সেনাবাহিনীর মত কঠিন চাকরির পাশাপাশি তিনি লেখাপড়াও চালিয়ে যান। ২০০০ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনি প্রথম শ্রেনীতে এম.ডি.এস পাশ করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে কমিশন লাভ করেন। এরপর সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে ১৯৯১ সালে এন.এস.এন.আই এস পাতিয়ালা ভারত থেকে এ্যাথলেটিক্সের উপর প্রথম শ্রেনীসহ ডিসটিংশন লাভ করেন। কঠোর পরিশ্রম নিষ্ঠা ও অধ্যাবসায় দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীর মত একটি সশস্র বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ ডিঙ্গিয়ে আজ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে কর্মরত আছেন। আর জাতি সংঘের অধীনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিশনে সুনামের সাথে কাজ করে দেশবাসীর জন্য অনেক সুনাম বয়ে এনেছেন।
মো.নাঈম আশফাক চৌধুরী সেনা অফিসার হিসেবে চাকরির পাশাপাশি একজন দক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় কৃতিত্বের সাক্ষর রাখেন।১৯৮৭-১৯৮৮ সালে জাতীয় এ্যাথলেটিকস প্রতিযোগীতায় দুইবার রৌপ্য পদক লাভ করেন। এর পূর্বে বিশ্বনাথে কোন ক্রীড়াবিদ এমন সাফল্য পাননি । ২০০২ সালে তুরস্কের স্টাফ কলেজ টেনিস প্রতিযোগীতায় তিনি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন্ এছাড়া তিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে ভলিবল টেনিস ,এ্যাথলেটিকস ও ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগীতায় বিভিন্ন পদক অর্জন করেন। অন্যদিকে নাঈম আশফাক চৌধুরী সেনাবাহিনীর এ্যাথলেটিকস দলের ও ১৯৯৩ সালে সাফ গেমসে জাতীয় এ্যাথলেটিকস দলের কোচ হিসেবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
বিশ্বনাথের কৃতিসন্তান নাঈম আশফাক চৌধুরীর বাবা মো. আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ছিলেন একজন স্বনামধন্য স্কুল শিক্ষক ।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি পর্যায়ক্রমে খাদ্য পরিদর্শক ,সিঙ্গার কোম্পানির কর্মকর্তা ও একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করেছেন এবং মা মরহুমা ডা. আক্তারুন্নেছা বেগম ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যবিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করছেন। নাঈম আশফাক চৌধুরী ১১ ভাইবোনের মধ্যে সপ্তম । এরই মধ্যে বড় ভাই ফয়েজ আহমদ চৌধুরী ইংল্যান্ডে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় ,প্রথম বোন হেনা চৌধুরী একই দেশে ও দ্বিতীয় বোন তাহমিনা চৌধুরী ঢাকায় শিক্ষকতা পেশার সাথে, দ্বিতীয় ভাই মিছবাহ উদ্দিন চৌধুরী সিলেটে ব্যবসার সাথে,তৃতীয় ভাই নাছিম উদ্দিন চৌধুরী আমেরিকার নিউইয়র্কে ডেন্টাল এসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। পঞ্চম ভাই সিরাজুস সালেকিন চৌধুরী বুয়েট থেকে ক্যামিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে কিছুদিন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি আমেরিকার এ্যানভায়রমেন্ট সাইন্স এর উপর পিএইচডি করেছেন ও আইটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ,চতুর্থ ও কনিষ্ট বোন রুমানা চৌধুরী ইংল্যান্ডে গৃহিনী হিসেবে এবং ষষ্ঠ ও সভার কনিষ্ট ভাই ফাহিম আশফাক চৌধুরী আমেরিকায় সরকারি চাকুরী করেন।
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে কমিশন লাভকারী বিশ্বনাথের কৃতিসন্তান নাঈম আশফাক চৌধুরীর দাদা মাওলানা উবায়দুল্লাহ ছিলেন একজন তালুকদার এবং দাদী হালিমা বেগম ছিলেন একজন সুগৃহিনী ।অন্যদিকে নানা মাওলানা আসদ্দর আলী ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার ।জাতীয় এ্যাথলিটকসে দুই দুই বার রোপ্য পদক বিজয়ী নাঈম ১৯৯২ সালে ঢাকার মিরপুরে বাসিন্দা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সিনিয়র একাউন্টেস অফিসার জনাব লুৎফুর রহমান ও শাহজাদী নুর ই আক্তারের ২য় কন্যা চৌধুরী আইনুন নাহার মুনার সাথে পারিবারিক পছন্দ অনুযায়ী বিবাহ বন্দনে আবদ্দ হন। সুখী এই দম্পতির ১ ছেলে ও ১ মেয়ে ।১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহনকারী তানজীম আশফাক চৌধুরী ও ১৯৯৮ সালের ৩০ শে জুল্ইা জন্মগ্রহনকারী চৌধুরী নুঝাত নাওয়াজ ।তারা উভয়ই লেখাপড়া করছে।