বিশ্বনাথের এম ইলিয়াস আলী বাংলাদেশের একজন আলোচিত রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৬১ সালের পহেলা জানুয়ারী অলংকারী ইউনিয়নের রামধানা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন । তার পিতার নাম মরহুম আলহাজ্ব মো. ওয়াছিব উল্লাহ ও মাতার নাম সূর্যবান বিবি । এম ইলিয়াস আলী রামধানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ভর্তি হন বিশ্বনাথের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্টান রামসুন্দর অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয়ে।সেখান থেকে এস.এস.সি পাশ করেন । এরপর সিলেট সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করে ভর্তি হন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।সেখান থেকে ১৯৮৬ সালে মার্কেটিং এর উপর এম.কম ডিগ্রী সম্পন্ন করেন ।
তবে ১৯৮১ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত হন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এম.ইলিয়াস আলী ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ার পর তিনি রাজনীতির সব কঠিন ও দুঃসময়ে দু:সাহসীকতার পরিচয় দিয়ে ও বলিষ্ট নেতৃত্ব দিয়ে ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের এক কিংবদন্তি ছাত্রনেতা হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম স্বর্নাক্ষরে লিখেছেন ।
বর বেশে সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী
সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাথে সাবেক এম পি এম ইলিয়াস আলী
স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্টার তাহসিনা রুশদী লুনা ও একমাত্র কন্যা সাইয়ারা নাওয়াল এর সাথে সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী
এম ইলিয়াস আলী ১৯৯২ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচনে সর্বাধিক ভোটের মাধ্যমে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে বিশ্বনাথ বাসীকে গৌরবান্বিত করেন। বিশ্বনাথের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে তিনিই প্রথম ছাত্রনেতা হিসেবে কোন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন । বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির অসীম সাহসী এই ছাত্রনেতা ছাত্ররাজনীতির কারনে একাধিক বার কারাবরণ করেন ।একসময়
১৯৯৬ সালে সিলেট ২ আসনে ৬ষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথম বারের মত অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন । তবে সে নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান বিরোধী দলগুলো উক্ত নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় সে সংসদের কার্যক্রম অতি অল্প ছিল । অবশ্য ১৯৯৬ সালে অনুষ্টিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবদলের অংশগ্রহনে বি,এন,পির প্রার্থী হিসেবে এম ইলিয়াস আলী ৩৮,৪৭৩ টি ভোট পেয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে দারুন এক চমক দেখান । এই আসনে ১৯৯১ সালে বি.এন.পির প্রার্থী হিসেবে এম এ হক পেয়েছিলেন ৬ হাজার এর চেয়ে কিছু বেশী ভোট ।১৯৯৬ সালে মাত্র ৩,৭৯৩ ভোটের ব্যাবধানে এম ইলিয়াস আলী হেরে গেলেও ২০০১ সালে এসে তিনি আওয়ামীলীগের রানিং এমপি শাহ আজিজুর রহমানকে ৪৮,১৬৯ টি ভোটের ব্যাবধানে হারিয়ে রাজনীতিতে দারুণ সাফল্য পান ।
এম.ইলিয়াস আলী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এই আসনে উল্লেখযোগ্য পরিমান উন্নয়ন করে ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখেছেন। সমাজের বিবেকবান কোন মানুষই এম ইলিয়াস আলীর সময়কার উন্নয়নের কথা অস্বীকার করতে পারবে না। রাজনীতির দুর্গম পথের সাহসী এই যোদ্ধা অল্পদিনের ব্যাবধানে জাতীয়ভাবে নিজের একটি সম্মানজনক স্থান অর্জন করতে সক্ষম হন । বিশ্বনাথের এই কৃতি সন্তান ২০১২ সালের ১৭ই এপ্রিল নিখোজ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ছিলেন সিলেট জেলা বি.এন.পির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বি.এন.পির সাংগঠনিক সম্পাদক ।ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিষ্টার ও একসময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্রীনেতৃ তাহসিনা রুশদী লুনার সাথে বিবাহ বন্দনে আবদ্দ হন এবং তাদের রয়েছে দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান।